Pages

Wednesday, September 6, 2017

গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে আলিপুরদুয়ার বিজেপিতে বিশাল ভাঙ্গন

গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে আলিপুরদুয়ার বিজেপিতে বিশাল ভাঙ্গন।
আলিপুরদুয়ার বিজেপি থেকে অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে প্রায় ছয় হাজার কর্মী, কর্মকর্তা নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। জেলা বিজেপি সভাপতি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা খোলাখুলি ভাবেই গোর্খাল্যান্ড সমর্থন করছেন এবং সক্রিয়ভাবে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন এই অভিযোগ করে তারা পদত্যাগ করেছেন। ফলতঃ জেলা বিজেপির বিপক্ষে বিশাল জনমত তৈরি হয়েছে।

এর কিছুদিন আগে একই অভিযোগ তুলে জেলা সহ-সভাপতি প্রবীণ বিজেপি নেতা হেমন্ত রায় পদত্যাগ করেছিলেন।

হেমন্ত রায় জেলা বিজেপির রাজবংশী মুখ হওয়াতে পার্শ্ববর্তী জেলা জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ির পুর নির্বাচনে তাঁর পদত্যাগ বিশাল প্রভাব ফেলে এবং বিজেপিকে তীব্র হারের সামনা করতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলিপুরদুয়ারের কয়েকজন বিজেপি নেতা জানালেন বর্তমান বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকে অপসারণ না করলে অতি শীঘ্রই বৃহৎ সংখ্যক বাঙালি,আদিবাসী, মেচ, রাভা সম্প্রদায়ের কর্মী ও কর্মকর্তারা নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।

অভিযোগ, যে জেলা সভাপতি ও তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গরা অর্থের বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তর বঙ্গের সমতলে গোর্খাল্যান্ড বিস্তারের কাজে নিযুক্ত আছেন এবং এই কাজে পিছন থেকে জেলা সভাপতিকে মদত দিচ্ছেন জেলার আর এস এস কর্মকর্তারা। অঙ্গুলি উঠছে জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত রায় ও আরও কয়েকজন পদাধিকারীর উপরেও। জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক জয়ন্ত রায়ের বিপক্ষে তো অর্থনৈতিক প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে।

দলের মধ্যে যে সমস্ত কর্মকর্তা বা কর্মীরা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার গোর্খাল্যান্ড সমর্থনের বিপক্ষে বলেছেন তিনি তাদের প্রায় সকলকেই দল থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছেন। এই সমস্ত কারণে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা এবং তার গ্রুপ আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারিয়েছেন। গোর্খাল্যান্ড সমর্থন করার কারণে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ও জয়ন্ত রায়কে দল থেকে বহিষ্কার করার দাবি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এদিকে বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতারা, কেন্দ্রীয় নেতারা এবং সংঘের নেতারা সমস্ত ঘটনাবলি জেনেও মৌনতা অবলম্বন করে থাকার দরুন গোষ্ঠী কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে।

গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ও তার বিশিষ্ট অনুচরেরা গোর্খাল্যান্ডের কার্যকলাপে জড়িত ও ব‍্যস্ত থাকায় জেলাতে দলের বিস্তারক কর্মসূচি ও কমিটি গঠনের কাজ 10 শতাংশের বেশি কোথাও এগোয়নি। যে সমস্ত কমিটি করা হয়েছে সেগুলো সব ভুয়া নামে ভর্তি। তার মধ্যে বেশিরভাগই সক্রিয় গজমম কর্মী বা নেতার নাম দেওয়া হয়েছে, যারা খোলাখুলিভাবে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন করছেন, ফলে আলিপুরদুয়ার জেলার ভোটারদের মনে বাংলা ভাগের ভীতির সঞ্চার এবং তৎসহ  তীব্র বিজেপি বিরোধিতার মানসিকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

জটিলতা আরও বেড়েছে কারণ সহ-সভাপতি হেমন্ত রায় পদত্যাগ করার পরেও তাকে শো-কজ করা। হেমন্ত বাবুর বক্তব্য, জেলা সভাপতির কোনো নৈতিক অধিকার নেই তাকে শোকজ করার কারণ তিনিও অভিযুক্ত। যদিও হেমন্ত বাবু শোকজের জবাব speed post য়ে পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি দলের বর্তমান অবস্থার কথা বিস্তৃত ভাবে বলেছেন। একজন সহ-সভাপতি ও একজন সম্পাদিকা সম্প্রতি যাদেরকে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমে তারা সংঘের নির্দেশে মুখ না খুললেও গঙ্গাপ্রসাদ  ও তার গ্রুপের উপর তারাও ভীষণ অখুশি।

বিশেষ সূত্রের খবর ডুয়ার্সে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে গজমম জয়গা ও তৎসন্নিহিত এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে যে অশান্তি সৃষ্টি ও ছড়াবার চেষ্টা করেছে, তার পিছনেও গঙ্গাপ্রসাদ বিশেষ ভূমিকা নিয়েছেন। কোন অজ্ঞাত কারণে জেলা পুলিশ সব জেনেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অনেকেই মনে করছেন।

No comments:

Post a Comment